‘হানিমুন’ শব্দটি নবদম্পতিকে পুলকিত করে। বিয়ের পরই তারা কোথাও হানিমুনে যেতে মনস্থির করেন। দেশে বা দেশের বাইরে গিয়েও তারা হানিমুন করে থাকেন। বিয়ের আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে থাকেন বর-কনে। সামর্থ অনুযায়ী হানিমুনের ধরন ভিন্ন হতে পারে। তবে হানিমুনের উৎপত্তি সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই।
শোনা যায়, হানিমুনের উদ্ভাবক নাকি জার্মানরা। দ্য শর্টার অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী, হানিমুনের অর্থ ছিল ‘বিয়ের পরের প্রথম মাস’। কিন্তু হানিমুনের বর্তমান অর্থ হচ্ছে, ‘নবদম্পতির একসঙ্গে বাড়ি ছেড়ে দূরে কোথাও সময় কাটানো’।
আবার শোনা যায়, ‘হানিমুন’ শব্দের উৎস ব্যাবিলন। প্রাচীন ব্যাবিলনে বিয়ের পরে মেয়ের বাবা জামাইকে তার চাহিদামতো মধু দিয়ে তৈরি মদ উপহার দিতেন। সে থেকেই কথাটি এসেছে ‘হানি’। ব্যাবিলনের ক্যালেন্ডার ছিল চান্দ্র। সেখান থেকে এসেছে ‘মুন’। শুরুতে নাকি ব্যাবিলনে বিয়ের পরের মাসকে ‘হানি মান্থ’ বলা হতো।
সেখান থেকে শব্দটি পরিবর্তিত হতে হতে শেষে হানিমুন হয়, যা প্রচলিত এবং জনপ্রিয় রীতি হিসেবেই গৃহীত। আবার অন্য এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিয়ের পরে টানা একমাস একপাত্র করে মধু দিয়ে তৈরি মদ খেতে হতো নবদম্পতিকে। মধু দিয়ে তৈরি মদ খাওয়ার প্রথা সেই হুন রাজা অ্যাটিলার সময় থেকে চালু ছিল। যা থেকেই এসেছে হানিমুন শব্দটি।
অনেকে মনে করেন, ‘মুন’ শব্দটির সঙ্গে ঋতুচক্রের যোগ রয়েছে। যার সঙ্গে আবার যৌনতাও জড়িয়ে। এর সঙ্গে হানি বা মধু জুড়ে দেওয়া হয়েছিল এটা বোঝাতে যে, বিয়ের পর কিন্তু একইরকম সুখ না-ও পাওয়া যেতে পারে। বেশিরভাগ হানিমুন কাপল যেখানে বিয়ের পর দুজনে কোথাও ঘুরতে যায়, সবসময় কিন্তু এমনটা ছিল না।
১৯ শতকে ব্রিটেনে কাপলরা বিয়ের পর ব্রাইডাল ট্যুরে যেতেন। এই ট্যুরে নবদম্পতিরা সেসব আত্মীয় এবং বন্ধুদের বাড়ি যেতেন, যারা তাদের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
তবে বাংলাদেশে হানিমুনকে ‘মধুচন্দ্রিমা’ও বলা হয়। বাংলাদেশি দম্পতিরা বিয়ের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে কোন পর্যটন এলাকা থেকে ঘুরে আসেন। হানিমুনের স্মৃতি হিসেবে সমুদ্রসৈকত, পাহাড়ি ঝরনা, রিসোর্ট, দর্শনীয় স্থানে সময় কাটান। বেশিরভাগ দম্পতি সমুদ্রসৈকতই বেছে নেন।