বুয়েট শিক্ষার্তী আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে গত ৬ অক্টোবর রাতে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। আপরারকে হত্যার সময় হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে ক্যাম্পাস উত্তালের সময় ছিল স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। নবাগতদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছু দাবি পূরণ করে নিয়ে আন্দোলন স্থগিত করে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।
তারপর ক্ষোভ ও শোকের পরিস্থিতির মধ্যেই ১৪ অক্টোবর বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৬ আক্টোবর (শনিবার) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
তবে কাকতালীয়ভাবে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারকারী শিক্ষার্থীর নামও আবরার, পুরো নাম কাজী আবরার মাহমুদ। শুধু তাই নয় ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এবছর নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জনকারী আবরার ছাড়াও আরো ১৭ জন আবরার রয়েছেন। এদের মধ্যে মেধা তালিকায় ১৫ জন, আর অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন দুজন। সবার নামের আগে পিছে ভিন্ন কিছু থাকলেও আবরার শব্দটা তাদের নামে রয়েছে।
এছাড়াও যারা মেধাতালিকায় নির্বাচিত হয়েছেন- আবরার আল শহীদ আবির (৬৬তম), আবরার মো. মাহির (৮২তম), আবরার মাহমুদ (১৯৩তম), কাজী আবরার মাহমুদ (২৪২তম), মো. আবরার জাহিন (২৯২তম), আবরার ফাইয়াজ ইরাম (৩০১তম), আবরার জাহিন নিলয় (৩১৪তম), মো. আবরার জাহিন চৌধুরী (৩৪৫), আবরার মিশকাত (৪৭৮তম), আবরার আহমেদ (৬৭০তম), আবরার ফাইয়াজ মাহবুব নাশিক (৭৪৮তম), আবরার হামিম মাসিহ (৮৪৭তম), মোস্তফা আবরার মাহির (৯১৪তম), আবরার বিন সালাহ উদ্দিন (৯৩০তম)।
এছাড়াও অপেক্ষমাণ তালিকায় নির্বাচিত হয়েছেন- মো. মাহির আবরার খান (১০৫৪তম) ও আবরার আবদুল্লাহ দিয়াম (১০৭২তম)।
এদিকে ফলাফলে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১২ হাজার ১৬১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ৬৫০ জন ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ও অপেক্ষমান তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, স্থাপত্য বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগ এবং নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে আলাদাভাবে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। স্থাপত্য বিভাগের প্রথম মেধা তালিকায় ৫৪ জনকে রাখা হয়েছে। আগামী ২৫ প্রথম দফায় ও ২৭ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাদেরকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে। ভর্তি হওয়ার শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর।
এছাড়া প্রকৌশল বিভাগ এবং নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রথম মেধা তালিকায় ১ হাজার ৪ জনকে রাখা হয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ও ২৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাদেরকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে। ভর্তি হওয়ার শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর।
প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার। গেল ৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তাকে ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।