ইসরায়েলে মালহাম নামে বিশ্বের দীর্ঘতম সল্ট কেভ বা লবণ গুহা আবিষ্কারের দাবি করেছেন দেশটির গুহাসন্ধানীরা। এই গুহা এতটাই বড় যে একে আস্ত দেশ বলা শুরু করেছেন গবেষকদের একাংশ। মালহাম গহ্বরের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার পথ এবং চেম্বার জুড়ে এই লবণের গুহা। দিনে দিনে মালহাম গুহায় এই লবণের বিস্তৃতি আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুই বছর আগে ইসরায়েলের গুহা এক্সপ্লোরার্স ক্লাবের ইয়োভ নেগেভ জরিপ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং গবেষকদের ও ক্যাভিং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল গঠন করেছে।
দীর্ঘতম লবণের গুহা থাকার রেকর্ড আগে ছিলো ইরানের। দেশটির কেসেম দ্বীপের ‘কেভ অব দ্য থ্রি নুডসকে’ দীর্ঘতম লবণ গুহা ধরা হতো। ইরানের কেশের দ্বীপের থ্রি ন্যুডস গুহাটি (৭ কিমি) ছিলো দীর্ঘতম।
গবেষকরা মনে করেন, মালহামে যত বেশি বৃষ্টির পানি পড়বে, এর দৈর্ঘ্য ততো বাড়বে। গুহার ভেতরে লবণের এমন সারি সারি স্তূপ সৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টিপাতের পানি চুইয়ে চুইয়ে পড়ার কারণে। গুহার দেয়ালের ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ার সময় তার সঙ্গে আসে লবণ।
অনেকের মতে গুহাটি যেখানে অবস্থিত সে স্থানটি বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মীয় এই গ্রন্থটির ভাষ্য, ধ্বংস করে দেওয়া সোডোম ও গোমরাহ শহরের দিকে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হলেও লুত নবীর স্ত্রী তা অমান্য করেছিলেন। তাই তিনি পরিণত হয়েছিলেন লবণের স্তম্ভে। মালহাম গুহার লবণের সারি শুরু ওই স্তম্ভের কাছ থেকেই।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মালহাম কেভের ভেতর শত শত শাখা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ শাখাটির দৈর্ঘ্য আধা কিলোমিটারের চেয়েও বেশি।
যে মালহাম কেভে লবণের এই স্তম্ভগুলো রয়েছে তার একটি অংশ মাউন্ট সোডোমের অংশ। এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় পর্বতমালা। ১৯৮০ সালের দিকে এর মানচিত্র সম্পূর্ণ করা হয়।
বছর দুই আগে ইসরায়েলের ইয়োভ নেগেভ নামক ক্লাব স্থানটির একটি জরিপ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন গবেষক ও গুহা বিশেষজ্ঞরা।
‘হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেম’র নেতৃত্বে গবেষক দলে ছিলেন ৯টি দেশের নাগরিক। জরিপের পর তারা দাবি উত্থাপন করেন, ইসরায়েলের মালহাম কেভেই সবচেয়ে দীর্ঘ লবণের গুহা।
দ্বিতীয় দফায় সর্বশেষ ১০ দিনের অভিযান চালিয়ে গুহাটির ১০ কিলোমিটারের বেশি এলাকা চিহ্নিত করে গবেষকদল। তারা ৮০টি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গুহাপ্রেমী দল মিলে লেজারের সাহায্যে মাপ নেওয়া এবং মানচিত্র তৈরির কাজটি করে। তাদের চোখে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।