বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে কলকাতা ভ্রমণে এসেছেন শত শত বাংলাদেশি। উৎসবের দিনগুলোতে মানুষের জনজোয়ার থেকে মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন অনেকেই। তবে বছর শেষে রেকর্ড যে এখনও কোনো শহরবাসী মদ্যপ অবস্থায় ধরা পড়েনি। আর সেই রেকর্ড ভাঙলো দুই বাংলাদেশি।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) কলকাতা এসেছিলেন গাজিপুরের মন্নুনগরের বাসিন্দা, বাবা-ছেলে সেরাজুল খান এবং নাফিউ খান। চিকিৎসার উদ্দেশে এসে শহর ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন তারা। তাদের সঙ্গে ছিল সেরাজুলের আরেক ভাতিজা।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বড় দিনের রাতে গোটা কলকাতা যখন উৎসব উদযাপন করছে, ঠিক সেই সময় বাবা-ছেলে তাণ্ডব চালালো মার্কিউ স্ট্রিট লাগোয়া, ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের প্রিন্সেস বারে।
বারের কর্মী সুজিত জানান, অনেকক্ষন ধরেই বারের ৬ নম্বর টেবিলটি দখল করে রেখেছিলেন তারা তিনজন। বিল মিটিয়ে দিয়েও প্রায় আধাঘণ্টা তারা বসেছিলেন। বাইরে ভিড়ের কারণে তাদের বলা হয় যে এতক্ষণ টেবিল ধরে রাখা যাবে না। এরপরই ‘তুই চেনস আমারে?’ এ কথা বলেই সুজিতকে গালিগালাজ করাসহ লাথি, কিল, ঘুষি মারতে থাকেন সেরাজুল খান। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দিলে তাকেও মারেন ছেলে নাফিউ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নিউমার্কেট থানাকে ফোন করে বার কর্তৃপক্ষ। এরপর পুলিশ গিয়ে তাদের গাড়িতে তোলার সময় মদ্যপ অবস্থায় বাবা কামড়ে দেয় পুলিশের হাতে। আর ছেলে অপরকে পুলিশকে ঘুষি মারেন।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) নিউমার্কেট থানার পুলিশ জানায়, বিদেশি বলে জোর করা হচ্ছিল না। তবে তাদের বেগতিক অবস্থা দেখে পথ চলতি বাংলাদেশিরাই তাদের মারধর করে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেন।
বারের মালিক মার্টিন বলেন, এতো বছরের ব্যবসায় আমার বারের ৯০ শতাংশই বাংলাদেশি ক্রেতা। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ রকম ঘটনা আগে কোনদিন ঘটেনি। আমি মূলত বাংলাদেশিদের উত্তেজিত হতে দেখিনি। তাই একটু খারাপ লাগছে।
পুলিশ জানায়, রোববার রাতে লকাপে থাকার পর সোমবার তাদের কলকাতার ব্যাংকশাল কোর্টে তোলা হয়। আদালত তাদের জামিন দিয়েছেন। তারা এখন কোথায় আছেন জানি না। তবে মার্ককিউ স্টিট সূত্রে জানা গেছে, তারা এ অঞ্চল ছেড়ে চলে গেছেন। পুলিশ আরও জানায়, পুরো ঘটনাটার বিষয়ে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারকে ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।