বোর্ড প্রধানের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ধর্মঘট উঠিয়ে নিয়ে ভারত সফরের প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। তবে প্রথম দিনের অনুশীলনে থেকে গেল কিছুটা কমতি, আসেননি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
জাতীয় দলের ক্যাম্পে সাকিবের যোগ না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিবের ঘনিষ্ট এক আত্মীয় জানান, সিপিএল খেলে সাকিব দেশে ফিরেছেন মাত্র কয়েকদিন হলো। তারপর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ওর ওপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে। শারীরিকভাবে একটু অসুস্থতাবোধ করছে, যে কারণে ক্যাম্পে যোগ দিতে পারেননি।
ওই আত্মীয় আরো জানান, সাকিব যে ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন না বিষয় তিনি বিসিবিকে জানিয়েছেন।
তবে অন্য সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণফোনের সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তি করে বিপাকে পড়েছেন সাকিব। যে কারণে প্রথম দিন যোগ দিতে পারেননি অনুশীলনে।
সাকিবের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানা গেছে, গ্রামীণফোনের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। কিন্তু সেটি বোর্ডকে না জানিয়েই। তা নিয়েই বোর্ডের অসন্তোষ। সে অসন্তোষ মেটাতেই নাকি শুক্রবার অনুশীলনে যোগ দেননি সাকিব।
বোর্ডের ভেতরের ঐ অসন্তোষ প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে নাজমুল হাসান পাপনের কথায়। দেশের এক শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রীতিমতো সাকিবের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন বিসিবি সভাপতি। পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তিটি বোর্ডের নিয়ম মেনে হয়নি। সে কারণেই সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন, বোর্ড লিগ্যাল অ্যাকশনে যাবে।
যার ধারাবাহিকতায় সাকিবের কাছে প্রথমে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। পুরো বিষয়টি বোর্ডের সঙ্গে থাকা চুক্তির নিয়ম মেনে হয়েছে কি না তা খুঁটিয়ে দেখা হবে। এ বিজ্ঞাপনে চুক্তির বরখেলাপ ঘটলে সাকিবের কাছে ক্ষতিপূরণও দাবি করবে বোর্ড। পাশাপাশি গ্রামীণফোনকেও লিগ্যাল নোটিশ পাঠাবেন বিসিবি বিগ বস।
উল্লেখ্য, বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া যেকোনো ক্রিকেটারের বিজ্ঞাপন বা নতুন কোনো চুক্তিতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ক্রিকেটারদের বলে দেয়া আছে, টিম স্পন্সরদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো চুক্তিতে যাওয়া যাবে না। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সে কারণেই নাকি তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীম গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞাপনের চুক্তি করতে পারেননি।
সূত্র জানিয়েছে, তামিম গ্রামীণফোন ও মুশফিক রবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব পেয়েছেন। অনুমোদন না পাওয়ায়, তামিম-মুশফিক বিজ্ঞাপনের চুক্তি না করলেও, সাকিব আল হাসান বোর্ডকে না জানিয়ে হঠাৎ সোমবার গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছেন। তাতেই চটেছেন বিসিবি সভাপতি।
সে কারণেই সাকিবের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি নিয়ে তার মুখে অমন কথা, ‘আমরা লিগ্যাল অ্যাকশনে যাচ্ছি। কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করব এখন। সেটি কম্পানির কাছেও দাবি করব, দাবি করব খেলোয়াড়ের কাছেও।
আমরা কি ছেড়ে দেব নাকি? কালকে (গত পরশু) শুনলাম প্রথম। আমি বলে দিয়েছি, গ্রামীণফোনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাও। বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাও। বলেছি, চিঠি পাঠাও সাকিবকেও। আমাদের ব্যাখ্যা চাই। সে আইন ভঙ্গ করে গেল কেন?
এখন সে যদি দেখাতে পারে যে আইন ভঙ্গ করেনি, ওকে তো বলার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের কাছে ব্যাপারটিকে মনে হয়েছে, বোর্ডের কোনো নিয়ম-কানুন মানি না। এ রকম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবই।’