মুসলমানদের ইবাদতের দিন শুক্রবার। এ দিন মুসলমানদের সপ্তাহিক ইবাদতের দিন। এ দিনের জুমআর নামাজ ত্যাগ করলেই আল্লাহ তাআলা মানুষের অন্তরে আবরণ তৈরি করে দেন। সে কারণে জুমআর নামাজ ত্যাগ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা ও হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, তারা উভয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর কাঠের মিম্বরের উপর দাঁড়ানোর অবস্থায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, ‘কোনো ব্যক্তিই যেন জুমআ (নামাজ) থেকে বিরত না থাকে। (জুমআর নামাজ ত্যাগ করলে) আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন। তারপর তারা অবশ্যই উদাসিনদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।’ (মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ জুমআর নামাজ পড়ে রিজিকের অনুসন্ধানে বের হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ থেকে বুঝা যায় জুমআর নামাজ আদায়েই মানুষের রিজিকের ফয়সালা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘অতপর যখন (জুমআ) নামাজ শেষ হয়, তখন তোমরা জমিনের মধ্যে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তথা রিজিক অন্বেষণ কর। আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)
এ কারণেই জুমআর দিন মুমিন মুসলমান আগে আগে মসজিদে যায় এবং জামআর নামাজ আদায় করে এবং বেশি বেশি দোয়া, দরূদ ও জিকির করে থাকে। হাদিসে পাকে এসেছে-
> ‘এ (জুমআ) দিন বেশি বেশি দোয়া কর।’ (বুখারি)
নাসাঈর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জুমআর দিন মুমিনদের বেশি বেশি দরূদ পাঠ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা দরূদ শরিফের ফজিলত অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে-
> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তাকে ১০টি রহমত দান করবেন। তার ১০টি গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। তার ১০টি মর্যাদা দান করবেন।’ (নাসাঈ)
প্রিয় নবি এ দরূদ পাঠ করতে বলেছেন-
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَ عَلَى الِ اِبْرَهِيْم إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَ عَلَى الِ اِبْرَهِيْم إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিম ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিম ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’ (বুখারি, মুসলিম)
জুমআর দিন মুমিন মুসলমানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ দিন দোয়া কবুলের জন্য নির্ধারিত সময় আছে। এ সম্পর্কে প্রিয়নবি ঘোষনা করেন-
‘জুমআর দিনে এমন একটি সময় আছে, বান্দা তখন আল্লাহর কাছে যা চায়, তাকে তা-ই দেয়া হয়। আর এ সময়টি হলো জুমআর দিন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত জুমআর দিন বেশি বেশি দোয়া, দরূদ ও জিকিরে অতিবাহিত করা। নিজেদের উত্তম রিজিক লাভে জুমআর নামাজ আদায় করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। জুমআ আদায়ের মাধ্যমে নিজেদের সকল গোমরাহী থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।