বহুল আলোচিত ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাজ জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবারের এই রায়ের পর আসামিদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কেউ বা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন প্রধান আসামী ও হত্যকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী সোনগাজী মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ওপর।
রায়ের পর আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় অনেকেই কাঁদছিলেন। কেউ কেউ নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। আবার দু’একজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অধ্যক্ষ সিরাজের ওপর।
একজন চিৎকার করে সিরাজের উদ্দেশ্যে বলেন, তোর কারণে আমাদের ফাঁসি হয়েছে। বলেই সিরাজকে চড়-থাপ্পর দিতে শুরু করেন। এসময় আরো কয়েকজন আসামি যোগ দেয় তার সাথে।
সিরাজকে মারতে শুরু করেন কয়েকজন মিলে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের নিবৃত করে।
এই হত্যকাণ্ডের মূল হোতা মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ। নুসরাতকে যৌন হেনস্তার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলায় হয়। মামলায় গ্রেফতার করা হয় সিরাজকে। এরপর কারাগার থেকেই তিনি তার সহযোগিদের নির্দেশ দেন নুসরাতকে হত্যার।
১৬ আসামি হলেন—সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা(বরখাস্ত), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।
৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। কারাগার থেকেই নুসরাতকে হত্যার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ সিরাজ।