Home > জাতীয় > জানা গেল সেই তথ্য, ভোলায় যে কারণে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল গু’লি করতে

জানা গেল সেই তথ্য, ভোলায় যে কারণে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল গু’লি করতে

গতকাল রবিবার এক যুবকের হ্যাক হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টকে কেন্দ্র করে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঈদগাহ মাঠে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘ’র্ষ বাধে। এতে চারজন নিহ’ত হয়েছে। আহ’ত হয়েছে শতাধিক। অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আ’টক করা হয়েছে। আহ’তদের অনেককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহ’তরা হলো বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর মাদরাসাপড়ুয়া ছেলে মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেনের কলেজপড়ুয়া ছেলে শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫) ও মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজান (৪০)।

জানা গেল সেই তথ্য, ভোলায় যে কারণে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল গু’লি করতে। ভোলার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন মাহফুজ হোসেন নামে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা। সেখানে তিনি পরিস্থিতি তুলে ধরে লিখেছেন ‘ভিডিওটা দেখুন। ভিডিওটা দেখার পরেও প্রশ্ন করার সুযোগ নেই পুলিশের গুলি করার কী যুক্তি ছিল। কয়েকজন মা’রা গেছে, এটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। কিন্তু গু’লি যারা করেছে, গু’লি না করলে তাদের এতোক্ষণে কি হতো ভেবে দেখেছেন?

“ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, শুভ নামের এক যুবকের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল গত ১৮ তারিখ। আমরা এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে আসি। গতকাল স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইমাম-আলেম ও গণ্যমান্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি। ওনারা আমাদের বলেন যে এ নিয়ে ওনাদের সমাবেশটি স্থগিত করবেন। তারপর আজ সকাল থেকেই দেখি ওনারা মাইক নিয়ে এসেছেন, স্টেজ বানাচ্ছেন। তখন সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।”

ভিডিওতে দেখা যায়, ঈদগাহসংলগ্ন মাদরাসার দোতলার একটি কক্ষে আশ্রয় পুলিশ সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে শত শত মানুষ হা’মলা করে দরজা জানালা ভাঙার চেষ্টা করে। এরপর ভিডিওর ৯ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে দেখা যায় দরজা ভেঙে পুলিশের ওপর হা’মলা করলে পুলিশ সদস্যরা ভেতর থেকে বের হয়ে আসে এবং সংঘ’র্ষ শুরু হয়। এরপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। ভিডিওতে একজন আহ’ত পুলিশ সদস্যকে মাটিতে পড়ে থাকতেও দেখা যায়।

এ ঘটনাটি সম্পর্কে ভোলা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মো. কায়সার বলেন, ‘শনিবার স্থানীয় আলেম-উলামদের নিয়ে থানায় বৈঠক হয়েছে। সেখানে তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছিল—বিপ্লবের আইডি হ্যাক হয়েছে। যারা হ্যাক করেছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের কথা শুনে আলেম-উলামারা তাঁদের পূর্বনির্ধারিত রবিবারের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন। কিন্তু রবিবার সকালে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি সফল করতে তরুণরা মাঠে মঞ্চ তৈরি করছে। একপর্যায়ে আমরা আলেম-উলামাদের নিয়ে সভার কথা তাদের বললে তারা মঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ রেখে যে যার মতো করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।’

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আমরাও থানার দিকে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে পেছন দিক থেকে একদল তরুণ আমাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। আমরা আত্মরক্ষার্থে ঈদগাহসংলগ্ন মাদরাসার দোতলার একটি কক্ষে আশ্রয় নিই। তখন হা’মলাকারীরা একপর্যায়ে দরজা-জানালা ভেঙে আমাদের কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন আমরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ি। পাশের রুমে থাকা পুলিশের একটি দলের ওপর হা’মলাকারীরা গু’লি বর্ষণ করে। এতে এক পুলিশ সদস্যের ডান বুকে গু’লিবিদ্ধ হয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’