Home > জাতীয় > জীবনে সিগারেটে একটা টানও দেইনি, তাস খেলাও শিখিনি: তথ্যমন্ত্রী

জীবনে সিগারেটে একটা টানও দেইনি, তাস খেলাও শিখিনি: তথ্যমন্ত্রী

“আমি সারা জীবনে একটি সিগারেটও খাইনি। এমনকি একটি টানও দেইনি। সিগারেটের টানে কী মাহাত্ম্য সেটি আমি জানি না। এটির পেছনে একটি গল্প আছে। সেটা বলেই শুরু করতে চাই।”

শুক্রবার রাজধানীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে ‘ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট ও বাংলাদেশ: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের করনীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

জীবনে কেন সিগারেট খাওয়া শুরু করেননি তার পেছনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “সেটি হচ্ছে, আমার মা মারা যান ৭ বছর বয়সে। আমার বাবা খুব সিগারেট খেতেন। তিনি ছিলেন আইনজীবী। একদিন ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। ডাক্তার তাকে সিগারেট খেতে নিষেধ করেন।

এরপর বাবা আমাকে এসে বলেন, জীবনে কখনো সিগারেট খাবি না। আমি বাবার সেই ওয়াদা রক্ষা করেছি। বন্ধুরা অনেক চেষ্টা করেছে, একটা টান দেয়ার জন্য। কিন্তু আমি দেইনি। একটা দিলে আরেকটা দিতে ইচ্ছা করবে।”

তাস খেলা প্রসঙ্গে বলেন, আমি তাস খেলাও শিখিনি। ইচ্ছা করেই শিখিনি। আমাদের প্রজন্ম তাস খেলে অনেক সময় ব্যয় করতো। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়।

এরপর ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় আইন করে ই-সিগারেট বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখবেন বলেও জানিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ই-সিগারেট বন্ধের কাজটি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট না হলেও আমি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো। সম্প্রতি ভারত ই-সিগারেট বন্ধ করেছে। আমাদেরও দ্রুত করা উচিত। এজন্য আইন প্রণয়ন করে বন্ধ করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হবে।

তিনি বলেন, দেশে ধূমপায়ীর হার ৪১ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। আমাদের এ সংক্রান্ত আইন আছে। আইনটি সম্পূর্ণভাবে মানা না হলেও যতটুকু মানা হচ্ছে তাতেই এ হার কমেছে। মানুষ এখন আর খোলা জায়গায় ধূমপান করে না।

এ কারণে কোম্পানিগুলো ই-সিগারেটের ব্যবসায় ঝুঁকেছে। এটির ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করলে একে এখনই বন্ধ করা উচিত। নইলে মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পৃথিবীর মধ্যে আমাদের দেশই সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ। তবুও আমরা সফলতা দেখছি। যখন চার কোটি লোক ছিল তখন খাদ্য ঘাটতি ছিল। এখন ১৬ কোটি হওয়ার পরও সেই ঘাটতি নেই।

আমরা এখন অনেক পণ্য রপ্তানিকারক একটি দেশ। দেশ উন্নত করার পাশাপাশি আমাদেরকে উন্নত জাতি গঠন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবান জাতি গঠন করতে হবে। এজন্য এধরনের সব ইস্যুতে আমাদের নজরদারি বাড়িয়ে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে হবে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, অ্যান্টি টোব্যাকো প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. আহমেদ খাইরুল আবরারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আসা প্রতিনিধিরা।

এসময় বক্তারা তরুণ সমাজ রক্ষার্থে ই-সিগারেট বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।