আবারো বড় ধরণের দরপতনের মুখে পড়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। রোববার ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় একশ পয়েন্ট। ফলে একদিনেই বিনিয়োগকারীদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক আগের দিনের চেয়ে ৯৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এটি আগের ৩১ মাসের মধ্যে সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ২৭ পয়েন্ট। ওইদিনের পর আজ রোববার সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে।
রোববার পুঁজিবাজারে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং প্রকৌশল খাতের প্রায় সব শেয়ারের দাম কমেছে। এদিন লেনদেন ৩০টি ব্যাংকের শেয়ারের মধ্যে মাত্র ২টি দাম বেড়েছে। বাকি ২৮টির মধ্যে ৭টির দাম অপরিবর্তিত ছিল এবং ২১টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। অন্যদিকে ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে ২০টিরই দাম কমেছে।
এদিকে রোববার ডিএসইতে মোট ৩৫২টি কোম্পানির ১৪ কোটি ৮৬ লাখ ১৮ হাজার ৪৯ টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৬১টির, কমেছে ২৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দাম। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৯৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএস-৩০ মূল্য সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৯৯ পয়েন্ট, ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৭ পয়েন্টে নেমে আসে। এদিন ডিএসইতে ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
দিন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানেই বাজার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুঁজিবাজারে দরপতনের প্রধান কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব। আর বিনিয়োগকারীরা এই আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে আর্থিক খাতের বিপর্যয়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের ঘোষণায় পুরো আর্থিক খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। এছাড়াও ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট এবং খেলাপিঋণ বেড়ে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে রোববার অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৮৪টি কোম্পানির ৭৯ লাখ ২৯ হাজার ৯৫৬টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৪২টির, কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনশেষে সিএসইতে মোট ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
আগেরদিন সিএসইতে কেনাবেচা হয়েছিল ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩০৯ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্ট নেমে আসে। আগের দিন সিএসইর সূচক ছিল ১৫ হাজার ৭২৪ পয়েন্ট।