ব্যবসায়িক সফরে গিয়ে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলো এক বিবাহিত প্রকৌশলী। ঠিক ওই সময়টাতেই হার্ট অ্যাটাকে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। এরপর তার মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তিনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সেই প্রতিষ্ঠানকেই।
এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে প্যারিসে। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম জেভিয়ার এক্স। তিনি প্যারিসভিত্তিক রেলওয়ে কোম্পানি টিএসও’র একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০১৩ সালে অফিসের পক্ষ থেকে মধ্য ফ্রান্সে একটি সফরে যান জেভিয়ার। ওই সফরে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে হোটেলে সময় কাটান তিনি। পরে তারা শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হয়। এর মাঝে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে মারা যান জেভিয়ার।
এর পরে প্যারিসের একটি আদালত ওই ফরাসি কোম্পানিকে কর্মীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে অর্থদণ্ডের রায় দেন। বলেন, তার মৃত্যু একটি ‘শ্রম-সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা’, যার দায় কোম্পানিকেই নিতে হবে এবং এজন্য মৃতের পরিবার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাবারও অধিকার রাখে।
এমনকি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানি তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল, জেভিয়ারের মৃত্যুকে ‘কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যু’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
কিন্তু জেভিয়ারের অফিস এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আপিল করে। সেই আপিলের শুনানিতে বীমা কোম্পানি দাবি করেছিল, শারীরিক সম্পর্ক, গোসল করা আর খাবার খাওয়ার মতোই একটি স্বাভাবিক কাজ। তাই ব্যবসায়িক সফর চলাকালে শারীরিক সম্পর্কের সময় মৃত্যুও প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব।
গত বুধবার প্যারিসের আপিল আদালত তার রায়ে আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন। আদালত বলেন, একজন কর্মী যখন অফিসের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবসায়িক সফরে থাকবেন, তখন সফরের পুরোটা সময়ের জন্য তিনি অফিসের কাছ থেকে সামাজিক সুরক্ষা পাবেন। এ সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, এই সুরক্ষা পাবার অধিকার তার থাকবে।
অবশ্য কোম্পানির পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়েছে, ওই ব্যক্তি যখন সদ্য পরিচয় হওয়া এক নারীর সঙ্গে তার হোটেল রুমে গিয়েছিলেন তখন তিনি তার অফিসের দায়িত্ব পালন করছিলেন না। সুতরাং ওই সময় মৃত্যু হলে তার দায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নয়।
কিন্তু আদালত বলেন, ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে অফিসের কাজে সফরে থাকার সময় যে কোনো দুর্ঘটনার দায় অবশ্যই অফিস কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। সূত্র: নিউইয়র্ক পোষ্ট