Home > বিশেষ সংবাদ > মেডিকেল ভর্তিতে দেশসেরা হয়ে পেছনের গল্প বললেন নূর

মেডিকেল ভর্তিতে দেশসেরা হয়ে পেছনের গল্প বললেন নূর

চলতি বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন রংপুরের রাগীব নূর অমিয়। তার টেস্ট স্কোর ৯০.৫০। তিনি রংপুর ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এসএসসিতে দিনাজপুর বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন।

অনুভূতি জানাতে গিয়ে অমিয় বলেন, ফলাফল পেয়ে ভীষণ খুশি তিনি। তার এমন ফলাফলের পেছনে মা-বাবাসহ শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে মানবতার সেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চান অমিয়।

অমিয়র টেস্ট স্কোর ৯০.৫০। তিনি রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে তিনি পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করেছেন।

রংপুরের চেকপোস্টের ধাপ এলাকার ছেলে রাগীব নূর অমিয় বাবার নাম মফিজুল ইসলাম ও মায়ের নাম আঞ্জুমান আরা চৌধুরী। বাবা-মা দুজনই চাকরি করেন।

রাগীব নূর বলেন, আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার কোচিংয়ের ভাইয়াদের অবদান অনেক ছিল। কোচিংয়ের ক্লাসগুলো অনেক ভালো ছিল। আমি রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমি কৃতজ্ঞ। এ ফলাফলে আমার টিচারদের পাশাপাশি আমার বাবা-মায়ের অবদানও অনেক। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।

রাগীব বলেন, মেডিকেল পরীক্ষায় ভাগ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে কেউ যদি পরিশ্রম করে, তবে ভাগ্য তার কাছে অবশ্যই হার মানবে। সবার উচিত, এইচএসসি পরীক্ষার জন্য বসে না থেকে একটু একটু করে দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নেওয়া। এটাই তাকে সফলতা এনে দেবে।

ফল প্রকাশের আগ মুহূর্তে ব্যাপক টেনশন লেগেছিল তার। তিনি বলেন, রেজাল্ট প্রকাশের পর ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, শুয়েছিলাম। মনে করেছিলাম, যা হওয়ার হবে। পরে আমাকে জানানো হয়, আমি ফার্স্ট হয়েছি। খুবই ভালো লাগছে, ভাবতেও পারিনি এমন রেজাল্ট করব।

আগামীতে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের প্রতি রাগীবের পরামর্শ একঘেয়ে জীবন নয়, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাও করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু পড়াশোনা করলেই হবে, খেলাধুলাও করতে হবে। রংপুর ক্যাডেট কলেজে থাকা অবস্থায় বাস্কেট বল খেলতাম। সবার কিছু কিছু লেখা উচিত। কারণ খেলাধুলা করলে মন ফ্রেশ থাকে এবং পড়াশোনা ভালো হয়।

ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন তৌওফিকা রহমান। তিনি সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৯।

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় তৃতীয় হয়েছেন সুইটি সাদেক। তিনি রাজধানীর ডেমরার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবার নাম সাদেক আলী ও মায়ের নাম খালেদা।

এছাড়া মেধাতালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন রাজধানীর হলিক্রস কলেজের শিক্ষার্থী তাসফিয়া মাসুমা রহমান। মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী রাফসান রহমান খান। মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাফিস ফুয়াদ নিবির।

মেধাতালিকায় সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিয়াজ রহমান। মেধাতালিকায় অষ্টম স্থান অধিকার করেছেন যশোরের কোটচাঁদপুরের উপজেলার মেয়ে সাবরিনা মুশতারী। মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেছেন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ ফাহিম আহমেদ।

মেধাতালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী খাইরুন নাহার আন্নি।

প্রসঙ্গত, এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৯ হাজার ৪১৩ জন। এদের মধ্যে মেয়ে ২৬ হাজার ৫৩১ জন, আর ছেলে ২২ হাজার ৮৮২ জন।

দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু হবে ২২ অক্টোবর, আর শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। সরকারি মেডিকেলে ভর্তি শেষ হওয়ার পর বেসরকারি মেডিকেলগুলোতে ভর্তি শুরু হবে।

১১ অক্টোবর সারা দেশে একযোগে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেলে ১০ হাজার ৪০৪ আসনের বিপরীতে অংশ নেন ৬৯ হাজার ৪০৫ জন।