গত জুন মাসে অনশন করার পরও চাকরি না পেয়ে আবারও অনশন শুরু করেছেন ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করা প্রতিবন্ধী চাঁদের কণা। সেবার চাঁদের কণা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে ও চাকরির আবেদন জানিয়ে অনশন করেছিলেন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিনি অনশন শুরু করেন।
চাঁদের কণা বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার বিয়াড়া গ্রামে। আমার বাবার নাম আবদুল কাদের, মাতা মৃত হাসনাহেনা। জন্মের পরেই পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। তাই হাতের উপর ভর দিয়ে বা হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। আমার বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে আছে। মা নেই। খুব কষ্ট করে পড়াশোনা শেষ করেছি। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও আমার কোনও ভালো চাকরি হয়নি। আমার চাকরির বয়সও শেষের দিকে।’
তিনি বলেন, ‘গত জুন মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি চেয়ে ও তাঁর সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য আমরণ অনশন করি। অনশনের তিনদিন পর প্রধানমন্ত্রী চাকরির আশ্বাস দেন এবং তার অধীনস্থ একান্ত সচিবকে চাকরির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কিছুদিন পর সচিব আমার দাবি অস্বীকার করে সিরাজগঞ্জ জেলা সমাজসেবা অফিসে অস্থায়ীভাবে হাজিরা ভিত্তিক চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকরি দেন এবং আমাকে আমার কাঙ্ক্ষিত চাকরি থেকে বঞ্চিত করেন। তাই আমি তার দেয়া চাকরিটি করিনি এবং নিয়োগপত্র নিতে যাইনি। কারণ এটা আমার এক ধরনের অপমান বলে মনে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে আমি গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শত চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাতে পারিনি। কারণ আমার কোন লবিং নেই। তাই নিরুপায় হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আমরণ অনশনে নেমেছি।’
চাঁদের কণা বলেন, ‘আমার শরীর দিন দিন ভারি হয়ে যাচ্ছে। কারো সাহায্য ছাড়া বাইরে যেতে পারি না। ভবিষ্যতে আমার কী হবে সে কথা ভাবলেই চোখে জল এসে যায়। কারণ যদি ভালো একটা চাকরি না হয় তবে আমার বিয়ে হবে না। থাকবে না কোনও জমানো অর্থ। তাহলে আমার কী হবে? কে দেখবে আমাকে?’
তিনি বলেন, ‘ঘরে আমার অসুস্থ বাবা। ছোট ভাইদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার মতোও কেউ নেই। এমতাবস্থায় যদি আমার কোনও চাকরি না হয় তাহলে আমাদের পুরো পরিবারটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই অনতিবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাই আমি।’