সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে নৃসংশভাবে হত্যা করেছে তার বাবা ও চাচা দুজন মিলে। আর এ কাজটি তারা করেছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
পুলিশ সুপার বলেন, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের সঙ্গে রাজানগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, সোলেমান, সালাতুলসহ বেশ কয়েকজনের দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলে আসছিল। বাছির নিজেও একটি হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। এছাড়া তুহিন হত্যা মামলার অন্য অভিযুক্তরাও কয়েকটি মামলার আসামি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ রোববার রাত আড়াইটার দিকে বাবা আব্দুল বাছির তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান। পরে তুহিনকে ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে, কান ও লিঙ্গ কেটে ঘরের পাশেই একটি কদম গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া দুই আসামির স্বীকারোক্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই হত্যাকাণ্ডে বাবা আব্দুল বাছির, চাচা নাসির উদ্দিন, জুলহাস, আব্দুল মচ্ছব্বির, চাচাতো ভাই শাহরিয়ার সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তবে তুহিনের চাচি ও চাচাতো বোন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে করছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় আসামিরা জানিয়েছে, গলায় ছুরিকাঘাত করার সময় বাবার কোলেই ছিলো তুহিন। গলা কাটার পর অভিযুক্তরা সবাই মিলে তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ও কান কাটে, যৌনাঙ্গ কেটে রশি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে।
এর আগে সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে গাছে ঝোলানো অবস্থায় শিশু তুহিনের কান, লিঙ্গ ও গলা কাটা ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দেখা যায় তুহিনের পেটে দু’টি ছুরি প্রবেশ করানো। ছুরি দু’টিতে একই গ্রামের বাসিন্দা ছালাতুল ও সোলেমানের নাম লেখা ছিল। ওইদিন রাতেই তুহিনের মা মনিরা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন।