ঘুরতে যেতে কে না ভালবাসেন। নতুন জায়গা, নতুন খাবার নিয়ে সকলেরই কমবেশি আগ্রহ রয়েছে। আর বেড়াতে যাওয়া নিয়ে তো প্রবচনই আছে, বাঙালির পায়ে শর্ষে রয়েছে। কিন্তু ঘোড়ার বিপুল ব্যয়ভারের কথা ভেবে অনেক সময়ই কাটছাট করতে হয় সেই পরিকল্পনায়।
বিল্ডিং কিংবা ব্রিজ, এমনকি রেল সেতুতে বাঁশের ব্যবহার দেখেছেন নিশ্চয়ই কিন্তু জানেন কি সেই বাঁশ দিয়েও হতে পারে ট্রেন। কিছু ট্রেনের তো আবার ইঞ্জিনটাই নেই। ইঞ্জিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় ঘোড়া। হ্যাঁ এমনই রেলগাড়ির ব্যবহার হয় পাকিস্তানে।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুতগামী এবং আধুনিক ট্রেন এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়লেও পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গঙ্গাপুরে এখনও চলে ঘোড়ার ট্রেন। সেই ১৯০৩ সাল থেকে আজও ঘোড়া চালিয়ে যাচ্ছে ইঞ্জিনের দায়িত্ব।
এই টেনের জন্যও রয়েছে নির্দিষ্ট স্টেশন, যাত্রী ছাউনি, এমনকি টিকিট কাউন্টার। রীতিমত টিকিট কেটে চড়তে হয় এই ট্রেনে। দুই বগি বিশিষ্ট এই ট্রেনে একসাথে চলতে পারে ১৬ জন যাত্রী। আমাদের কাছে ট্রেন লেট নিত্যদিনের ঘটনা হলেও ঘোড়ায় চড়া এই ট্রেন কখনোই লেট করে না।
চলতি পথে দুই দিক থেকে আসা দুটি ট্রেন মুখোমুখি হলে যাত্রীরা নেমে ট্রেন পরিবর্তন করে নেন। সেই সুযোগে চালক ঘোড়াটিকে টেনে দিক পরিবর্তন করেন। ঘোড়ায় টানা এই ট্রেনের জনপ্রিয়তা নেহাত কম নয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি এই ট্রেনে চড়তে দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকের আগমন ঘটে পাঞ্জাবের গঙ্গাপুরে।
১৯৯৩ সালে এই ট্রেন একবার বন্ধ হলেও ২০০৭ সালে আবারও চালু হয় অদ্ভুত এই ট্রেন। পাকিস্তানের মতোই কম্বোডিয়াও আছে এই ট্রেন। তবে ঘোড়ার যায়গায় ব্যাবহার করা হয় ছোট পেট্রোল ইঞ্জিন। বিশ্ববাসীর কাছে এই ট্রেন ব্যাম্ব ট্রেন হিসেবে সুপরিচিত হলেও স্থানীয়রা একে নরি হিসেবে চেনেন।
অনেকটা আমাদের দেশীয় ভ্যানের মত দেখতে। বাঁশ দিয়ে তৈরি চৌকোনা এই ট্রেনের চাকায় ব্যবহার করা হয় পরিত্যক্ত মিলিটারি ট্যাংকের চাকা। সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে এই ট্রেন আর গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আছে বিশেষ ব্রেকের ব্যবস্থা।