দুনিয়ার প্রতিটা মানুষ সুখী হতে চায়, তবে একেক জনের সুখী হওয়ার পদ্ধতি একেক রকম। কেউ সেই সুখের দেখা পায়,কেউ পায়না। অনেকে মনে করেন, মনের মানুষকে বিয়ে করতে পারলেই তিনিও সুখী হবেন। এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়, তাদেরকে কষ্ট দিয়ে, নিজে কত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে প্রেমিক/প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।
কিন্তু বিয়ে করার পর তাদের মনে হয়েছে, জীবনের সবচাইতে বড় ভুল কাজটা করে ফেলেছেম, যা শোধরানোর কোন সুযোগ নেই। অনেকে স্বপ্নের চাকরী, অর্থ সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, সুন্দরী নারী খুজে বেড়ায়। যখন সেটাকে পেয়ে যায়, অন্ধকারে সম্পদ মনে করে সাপ হাতে তুলে নেওয়ার মতো মনে হয়।
এভাবেই হয়তোবা আল্লাহ নাফরমান মানুষদেরকে দুনিয়াবী সামান্য আজাব ভোগ করান।
যাই হোক, জীবনে সুখী হওয়ার সবচাইতে সহজ উপায় হচ্ছে, সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করা এবং সুখে-দুঃখে একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা, তার উপরে ভরসা করা। আপনি আল্লাহকে স্মরণ করলে আল্লাহও আপনাকে স্মরণ করবেন, আপনার দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর করে দিবেন বলে আল্লাহ এবং তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।” [সুরা রাদঃ ২৮।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আ’নহুমা বর্ণনা করেছেন। একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের (আরোহী জন্তুর) পিছনে ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, “হে তরুণ ছেলে! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শেখিয়ে দিবো, তুমি আল্লাহকে সংরক্ষণ করবে তো, তিনি তোমাকে সংরক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহকে স্মরণ করলে তাঁকে তোমার সামনেই পাবে। যখন তুমি কিছু চাইবে, শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইবে। যখন তুমি সাহায্য চাইবে, শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে। জেনে রাখ, সমস্ত মানুষ যদি তোমার কোন উপকার করতে চায় তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, তা ব্যতীত আর কোন উপকার করতে পারবে না।
আর যদি সমস্ত মানুষ তোমার কোন অনিষ্ট করতে চায় তবে, আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তা ব্যতীত আর কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং পৃষ্ঠা শুকিয়ে গেছে।” তিরমিযীঃ ২৫১৬, হাদীসটি হাসান সহীহ।
তিরমিযী ছাড়া অন্য বর্ণনায় হাদীসটি এইভাবে বর্ণিত হয়েছে, “তুমি আল্লাহকে স্মরণ করবে, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সম্মুখে পাবে। তুমি স্বচ্ছল অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করবে তো তিনি তোমাকে কঠিন অবস্থায় স্মরণ করবেন। মনে রেখো, যা তুমি পেলে না, তা তোমার পাবার ছিল না। আর যা তুমি পেলে, তা তুমি না পেয়ে থাকতে না। আরো জেনে রাখো, ধৈর্য্য ধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ্য আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে।”
মাদ্রাসার তুলনায় কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা পাপ কাজ বেশি করে।
বেনামাযী, বেপর্দা, যিনা-ব্যভিচার, অশ্লীলতা, নাটক-সিনেমা, গান-বাজনা, চরিত্রহীনতার টিভি দেখা, গল্পের বই পড়া, মদ জুয়া ইত্যাদি ফাসেকী কাজগুলো কারা বেশি করে বলার প্রয়োজন পড়েনা।
এর ফলে দেখবেন ক্যাম্পাসগুলোতে খুন-খারাবী, ধর্ষন, নারী নির্যাতন, প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে আত্মহত্যা এমন কাজ দিয়ে সেখানকার দুনিয়াটাকেই যেন তারা জাহান্নাম বানিয়ে ফেলছে।
আল্লাহকে কখন কিভাবে স্মরণ করতে হয়, কিভাবে তার কাছে দুয়া করতে হয় বা কি বলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয় জানার জন্য নীচের এই বইগুলো অবশ্যই সংগ্রহ করবেনঃ
(১) হিসনুল মুসলিম, (২) ১০০০ সুন্নত, (৩) শায়খ আব্দুল হা’মীদ ফাইজীর লিখিত সহীহ দুয়া ও ঝাড়ফুক শিক্ষা, (৪) রিয়াদুস সালেহীন (যিকর ও দুয়া অধ্যায়)।
আল্লাহ আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দিন ও আমাদেরকে পাপাচার ও ফেতনা থেকে দূরে রাখুন, আমিন।