নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের আটবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক ( জুনিয়র ) বিদ্যালয়ে গণহিস্টিরিয়ায় ২৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠান। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীসহ পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হচ্ছে- সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নাছিমা আক্তার, অষ্টম শ্রেণির রাবেয়া আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণির রোমানা আক্তার, সপ্তম শ্রেণির তানিয়া আক্তার, সপ্তম শ্রেণির নুসরাত আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ফাইজা আক্তার, সপ্তম শ্রেণির ফাইমা আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণির কাঞ্চনা আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণির উম্মে সুমাইয়া, চতুর্থ শ্রেণির শাহানা আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণির হাসিনা বেগম, পঞ্চম শ্রেনির হাসিনা আক্তার, তৃতীয় শ্রেণির ওমর ফারুক, সপ্তম শ্রেণির মোবারক হোসেনসহ ২৪ জন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল নাসির উদ্দিন জানান, সকালে দ্বিতীয় ঘণ্টার পর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ফাইজা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তার দেখাদেখি অন্যান্য শ্রেণিতেও বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়তে থাকায় তারা বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের বিষয়টি অবহিত করেন। তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকরা বিদ্যালয়ে আসেন। এ খবর পেয়ে দ্রুত সিভিল সার্জন ডা. মমিনুর রহমানও ছুটে আসেন। পরবর্তীতে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের আলাদা করে কিছুক্ষণ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অভিভাবকদের মাধ্যমে বাড়িতে পাঠানো হয়।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস জানান, তারা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন তাদের বেশ কয়েকজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি। যে কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের দেখাদেখি আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। অসুস্থদের আলাদা কক্ষে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ আইসোলেশনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মমিনুর রহমান জানান, একটি বিদ্যালয়ের এক সঙ্গে ২৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে তিনি নিজে ওই বিদ্যালয়ে যান। অসুস্থদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝা গেছে কয়েকজনের গায়ে জ্বর থাকায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আবহাওয়া পরিবর্তন বা গণহিস্টিরিয়ার কারণে তারা অসুস্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নে রাতুল (২২) নামে এক কাতার প্রবাসীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোহাম্মদ ইউছুফ জানান, গতকাল সোমবার বিকেলে কাতার থেকে বাংলাদেশে আসেন রাতুল। মঙ্গলবার সকালে রাতুলের ভগ্নিপতি আব্দুর রহিম তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জ্বর, গলা ব্যথা, কাশি ও মাথা ব্যথা এসব উপসর্গ দেখে সন্দেহ হওয়ায় রাতুলকে নিজ বাজিতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।