যত দিন যাচ্ছে, চিনে ততই কোণঠাসা হচ্ছে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়৷ শিক্ষা দেওয়ার নামে তাঁদের ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ নিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার চালাচ্ছে চিনা প্রশাসন৷ এমনকী, ক্যাম্পগুলিকে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ আখ্যা দিয়ে, এদের স্বীকৃতিও দিয়েছে বেজিং৷ তবে এ তো হিমশৈলের চূড়া মাত্র। অভিযোগ, জোর করে উইঘুর মুসলিমদের শরীর থেকে হৃদপিণ্ড, কিডনির মতো অঙ্গ বের করে নিচ্ছে চিন।
সদ্য রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ‘অঙ্গ চুরি’ নিয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে ‘চায়না ট্রাইবুনাল’ নামের একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সরকারের মদতেই জোর করে উইঘুর মুসলিম-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের হার্ট, কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বলে দাবি জানিয়েছে ‘চায়না ট্রাইবুনাল’।
গত মঙ্গলবার, সংগঠনটির আইনজীবী হামিদ সাবি এই বিষয়টি রাষ্ট্রসংঘে উত্থাপন করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ মানুষের অঙ্গ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শতাব্দীর অন্যতম নৃশংস অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে চিনে।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। সেখানে বলা হয়েছিল, সাজা প্রাপ্ত আসামিদের হত্যা করে অঙ্গ চুরি করছে বেজিং। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে চিন। ২০১৫ সালেই গবেষণার জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের অঙ্গ নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে বলে পালটা দাবি করেছে বেজিং।
উল্লেখ্য, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’-এ পাঠানোর নামে আগেই এক মিলিয়ন উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের জিনজিয়াং প্রদেশের বিশেষ ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ পাঠিয়েছে চিন৷ রাষ্ট্রসংঘে প্রকাশিত রিপোর্টে বলছে, ওই ক্যাম্পগুলিতে রীতিমতো মগজধোলাই করা হয় উইঘুরদের৷ চলে অকথ্য অত্যাচার৷
এমনকী, উইঘুরদের মধ্যে হালাল-বিরোধী অভিযানও শুরু করেছে জিনপিং সরকার৷ প্রশাসনের দাবি, উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে হালালের ধারণা কার্যত গোঁড়ামিতে পরিণত হয়েছে৷ তাঁদের সেই ধারণা থেকে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন৷
ওই সংখ্যালঘু মুসলিমদের যথাযথ শিক্ষার প্রয়োজন৷ তবে আশ্চর্যের বিষয় হল ‘ইসলাম ধর্মে’র উপর চিনা প্রশাসনের এই ‘দাদাগিরি’ পরও চুপ ইসলামিক দেশগুলি৷ মুখে কুলুপ এঁটেছে পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো ইসলামিক রাষ্ট্রগুলি৷ এমনকি চুপ রয়েছে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কর্পোরেশন৷