টানা ৬০ বছরেরও বেশি সময় গোসল করেননি। তারপরও তিনি সুস্থ আছেন। উদ্দেশ্য তার রেকর্ড গড়া। কত দশক গোসল না করে থাকা যায় তার রেকর্ড। আপাতত সেই রেকর্ড ইরানের আমৌ হাজির পকেটে। তার দাবি, গত ছয় দশকেরও বেশি সময় তিনি গোসল করেননি।
গোসল করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে নাকি তার অস্বস্তি হয়। তাই নোংরা, মলিন থাকতেই পছন্দ করেন এই বৃদ্ধ। ভালোবাসেন পাইপ টানতে। তবে সেখানে ভরা থাকে বিভিন্ন পশুর বর্জ্য পদার্থ। তামাকের বদলে তার ধোঁয়াতেই সুখটান পান তিনি।
তবে যার কাছ থেকে রেকর্ড ছিনিয়ে নিয়েছেন আমৌ, তিনি ভারতের কৈলাস সিংহ। কৈলাসের বাড়ি ভারতের বারাণসীতে। তিনিও আমৌ’র মতো গোসল করতে মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন। ১৯৭৪ থেকে চার দশকেরও বেশি সময় তিনি গোসল করেন না। সে বছর তার বিয়ে হয়েছিল। কৈলাসের দাবি, এক সাধু তাকে বলেছিলেন, গোসল না করলে তিনি পুত্র সন্তান লাভ করবেন।
কিন্তু ইরানের আমৌ’র ক্ষেত্রে গোসলাত’ঙ্কের কারণ জানা যায়নি। তবে কাশীর কৈলাস বা সুদূর পারস্যের আমৌ, দুজনেই গোসল না করলেও প্রচুর পানি পান করেন। একটা মরচে ধরা পাত্র থেকে সারাদিনে তিনি পাঁচ লিটার পানি পান করেন।
কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে দুজনেরই প্রবল অনীহা। আমৌ তো চুলও কাটেন না। খুব বড় হয়ে গেলে নিতান্ত দরকার পড়লে চুল পুড়িয়ে ফেলেন। তার প্রিয় খাবার সজারুর পচা মাংস। ঠান্ডায় কষ্ট পেলে মাথায় পরে নেন পুরনো আমলের শিরস্ত্রাণ।
রাতে ঘুমনোর সময় আমৌ বেশির ভাগ দিন বেছে নেন তার মাটির নিচের গর্ত। খানিকটা কবরের মতো সেই আস্তানা। অনেক সময় আকাশের নিচে খোলা মাঠেও শুয়ে পড়েন।
তবে এ কথা ভাবার কারণ নেই যে, আমৌ হাজি নিজের যত্ন করেন না। মাঝে মাঝেই গাড়ির ভাঙা আয়নায় দেখে নেন চেহারা। ফুটিফাটা পোশাক পরনে নিজের মলিন চেহারাটা দেখতে তার বেশ ভালো লাগে।
এদিকে আমু জানান, এমন জীবনে তিনি খুব খুশি। তার মতে, যারা বড় বড় অট্টালিকায় থাকে তাদের অনেক কিছু হারানোর ভয় থাকে। তার কাছে কিছু নেই হারানোর মতো, যা ছিল তা অনেক আগেই সে হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই পৃথিবীতে তার থেকে সুখী মানুষ আর দ্বিতীয় কেউ নেই।