Home > জাতীয় > ‘টেনে-হিঁচড়ে’ ডেলিভারি করালেন নার্স-আয়া, নবজাতকের মৃত্যু

‘টেনে-হিঁচড়ে’ ডেলিভারি করালেন নার্স-আয়া, নবজাতকের মৃত্যু

মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসক না থাকায় নার্স ও আয়ারা অদক্ষ হাতে ‘টেনে-হিঁচড়ে’ এক প্রসূতির ডেলিভারি করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মাথায় আঘাত পেয়ে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল রোববার মধ্যরাতে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে সিটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর অদক্ষ নার্স দিয়ে ডেলিভারি করানোর কারণে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে।

স্থানীয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ,মাদারীপুর জেলার পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বরইতলা গ্রামের সাদ্দাম শেখের স্ত্রী হাফসা বেগমের রাত ১২টার দিকে প্রসব ব্যথা ওঠে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাফসাকে টেকেরহাট সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিল না। হাসপাতালের নার্স ইতি আক্তার,হেলেনা আক্তার ও আয়া চায়না আক্তার ওই প্রসূতির ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন।

এ সময় নার্স-আয়ারা বাচ্চা ডেলিভারি করানোর জন্য টানা-হেঁচড়াও শুরু করেন। এতে বাচ্চা বের করতে না পারায় এক পর্যায়ে প্রসূতির পেরিনিয়াম (যোনির শুরু থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত টিস্যু) কেটে বাচ্চা বের করেন। তবে এ ঘটনায় ওই নবজাতকের মাথা কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। পেরিনিয়াম কেটে ফেলায় প্রসূতি হাফসার অবস্থাও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে।

এদিকে, প্রসূতির অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালের নার্স ও আয়ারা পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় হাফসাকে তার পরিবার ফরিদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে (প্রভাতী হাসপাতাল) ভর্তি করেন।

হাফসার মামা মাসুদ শেখ বলেন, ‘সিটি হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় নার্স ও আয়ারা মিলে টেনে-হিঁচড়ে বাচ্চা বের করার চেষ্টা করেন। এতে আমার ভাগ্নির বাচ্চা মারা যায়। ভাগ্নির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও এই হাসপাতালে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এবং র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন হাসাপাতালের কর্তা-ব্যক্তিরা।

সিটি হাসপাতালের মালিকপক্ষের একজন রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আনার আগেই বাচ্চাকে টানা-হেঁচড়া করা হয়। পরে অবস্থা খারাপ দেখে আমাদের এখানে ভর্তি করেন তারা। আমরা বাচ্চা প্রসব করানোর পরে দেখি বাচ্চা মৃত।’

রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘ঘটনা আমি শুনেছি। সিটি হাসপাতালে গিয়ে সবকিছু জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

এ ঘটনায় রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহজাহান বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’