আমরা সুসময়ের চেয়ে দুঃসময়ে সৃষ্টিকর্তাকে বেশি স্মরণ করি। দুহাত তুলে মোনাজাত করি যেকোনও বিপদ মসিবত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া জন্য। পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি, যেন তিনি তাঁর বান্দাদের নিরাপদে, সুখে ও শান্তিতে রাখেন। কিন্তু কখন কোনও সময়ে দোয়া করলে তা দ্রুত কবুল হয় তা জানা আছে কি?
দোয়া বা প্রার্থনা সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ স. বলেছেন, দোয়া ইবাদতের সারাংশ বা মূল।
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে এবং লাঞ্ছিত হবে। সূরা আল-মু’মিন, আয়াত ৬০।
হাদিসে উল্লেখিত যে ৫টি সময়ে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া কবুল হয় তা নিচে তুলে ধরা হলো-
১. রাতের শেষ তৃতীয়াংশের দোয়া। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল সা. বলেছেন, প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে মহান আল্লাহ সবচেয়ে কাছের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছো? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইছো? আমি তাকে তা দেব। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী’ আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। (মুসলিম)
২. জুমার দিনের দোয়া। হাদিসে এসেছে হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল সা. আমাদের একদিন শুক্রবারে ফজিলত নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যে সময়টায় যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় পায় এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ মহান অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসূল সা. তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টা সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন। (বুখারি)
৩. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়। হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া করা হলে তা ফিরিয়ে দেয়া হয় না। (তিরমিজি)
৪. সেজদারত অবস্থার দোয়া। রাসূল সা. বলেন, যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটতম অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদারত অবস্থা। সুতরাং তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও বা প্রার্থনা করো। (মুসলিম)
৫. জমজমের পানি পান করার সময়ের দোয়া। রাসূল সা. বলেন, জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হবে, তা কবুল হবে। অর্থাৎ এই পানি পান করার সময় যে দোয়া করা হবে, ইনশাআল্লাহ তা অবশ্যই কবুল হবে। (ইবনে মাজাহ)