অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায়ে শুধু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতারাই জড়িত নন। ঢাকায় যুবদলের দুই শীর্ষ নেতার ছত্রছায়ায় ক্যাসিনোর অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ক্যাসিনো ক্লাবে বসিয়ে দেদারছে ব্যবসা করেছেন।
কাকরাইলের রাজমনি ঈশা খা হোটেল সংলগ্ন এলাকায় সাইফুল আলম নীরবের যে অফিস সেটাই ছিল ক্যাসিনোর চাঁদা সংগ্রহ করার স্থান। যুবদলের এই দুইজন মাফিয়া সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও নেপালের মতো ক্যাসিনো বসিয়ে নিয়মিত হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। অল্পদিনে হয়েছেন বিত্ত বৈভবের মালিক। তারা মোটা অংকের অর্থ বিভিন্ন কৌশলে বিদেশে পাচার করেছেন।
এই দুজনের একজন এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন যিনি নীরবের হয়ে প্রতিদিন তার এজেন্ট দিয়ে চাঁদার টাকা সংগ্রহ করতেন। ইতিমধ্যে জাহাঙ্গীর গা ঢাকা দিতে লন্ডন পালালেও সাইফুল আলম নীরব এখনও দেশেই আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর কাকরাইলে রাজমনি ঈশা খা হোটেলে প্রতিদিন সন্ধ্যায় মিলিত হতেন যুবদল নেতা সাইফুল আলম নীরবসহ তার ক্যাডার বাহিনী। সেখানে তারা মদ্যপান ও নারী নিয়ে রঙ্গ তামাশাসহ ক্যাসিনোর চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করতেন। এসএম জাহাঙ্গীর তার দুজন বিশ্বস্ত কর্মী দিয়ে এই টাকা আনা নেয়ার কাজ করাতেন।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আরও বেশ কিছু তথ্য। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া জি কে শামীমের সাথে নীরবের ছিল গভীর সখ্যতা। সরকারী বিভিন্ন কাজের টেন্ডার নিরব সমর্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিতেন জি কে শামীম। শামীমের অফিসের বেশ কয়েকজন স্টাফের সাথে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
সুত্রমতে, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক নেতা নীরব মহানগর কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী হওয়ায় নগরের সবার সাথেই তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে৷ যেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত পরিচয়ের ব্যাপারটিই প্রাধান্য পায় বেশী৷ জানা যায়, ৩ শতাধিক মামলার আসামী হয়ে ও আওয়ামী লীগ সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ১ বারের জন্য ও জেলে যেতে হয়নি নীরবকে৷ যখনই নীরবকে গাড়ী পোড়ানো এবং হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করতে চেয়েছে তখনই তার প্রভাবশালী ক্যাসিনো পার্টনাররা নানাভাবে তদবির করে নীরবের গ্রেফতার ঠেকিয়ে দিয়েছে।