Home > জাতীয় > সারাদেশ > সন্তান অপহরণের কথা বলে গৃহবধুকে খোলামেলা হয়ে ভিডিও কল করার আদেশ

সন্তান অপহরণের কথা বলে গৃহবধুকে খোলামেলা হয়ে ভিডিও কল করার আদেশ

প্রতারণা , অসাধু উপায়ে উপার্জন, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনো .. একটা দেশের অবক্ষয়ের আর কিছুই বোধ হয় বাকি নেই সাম্প্রতিক সময়ে । প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্য নতুন প্রতারণার উপায়, খুব সহজে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মানুষের কষ্টার্জিত উপার্জন, দেশের বিশাল একটা শ্রেণী বিনা পরিশ্রমে অল্প সময়ে আধিক টাকা আয়ের যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা ফাঁদ পেতে চলেছে, আর সেই ফাঁদে পাও দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। পরিণামে গুণতে হচ্ছে অনেক টাকা আর সামাজিক বদনাম তো আছেই।

বেশ কিছুদিন আগে শিলা খাতুন (ছদ্মনাম) নামের এক গৃহবধূর মোবাইলে ফোন করে এক প্রতারকচক্র। ফোনে ওই গৃহবধূকে জানানো হয়, তার সন্তানকে অপহরণ করা হয়েছে। সন্তানকে ফিরে পেতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে ভিডিও কনফারেন্সে খোলামেলা হয়ে কল দিতে বলা হয়। মোবাইলে সন্তান অপহরণের কথা শুনে ওই গৃহবধূ তাদের কথামতো ইমোতে কল দেন।

এরপর ইমোতে বেশ কিছুক্ষণ ওই গৃহবধূকে খোলামেলা দেখে কল কেটে দেন প্রতারকরা। কিছুক্ষণ পর ওই গৃহবধূ জানতে পারেন, তার সন্তানের অপহরণের বিষয়টা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। এভাবেই খোলামেলা ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা।

প্রতারক চক্রের এমন দুজন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে সিআইডি’র সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)। গ্রেপ্তার দুজন হলেন, মো. আলমগীর হোসেন (৩০) ও মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন জাহান এসব তথ্য জানান।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক চক্রের দুজন জানান, ধারণকৃত ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোবাইলে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয় ভুক্তভোগিদের থেকে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে প্রতারক চক্রের ওই দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন জাহান জানান, এজেন্ট ও গ্রাহকের সমন্বয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এমন অপরাধী চক্র। মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে সহজেই অপরাধীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সাইবার পুলিশ সেন্টার, সিআইডির একটি টিম পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও পেনাল কোডের একটি মামলার সূত্র ধরে এমনই একটি চক্রকে শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা।
এই প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত গ্রেপ্তার হওয়া দুই এজেন্টও, আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও ভুয়া নাম ও ঠিকানায় মোবাইল ফাইন্যান্স হিসাব খুলে দিয়েছে এবং কোনপ্রকার লিপিবদ্ধ বাদেই প্রতারক চক্রের হাতে টাকা তুলে দিয়েছে। ছবি : প্রতিকী